জিয়া ট্রাস্ট মামলা ১৫ মে পর্যন্ত মুলতবি
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসু্স্থতাজনিত কারণে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানি আগামী ১৫ মে পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আদালত।
আজ সোমবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কামরুল হোসেন মোল্লার বিশেষ আদালতে উপস্থিত হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে সময়ের আবেদন করেন খালেদা জিয়া।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আইনজীবী ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার মামলার শুনানি মুলতবির জন্য তিন সপ্তাহের আবেদন করেন। অন্যদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এর বিরোধিতা করেন।
প্রথমে খালেদা জিয়ার আবেদন নামঞ্জুর করে আইন অনুযায়ী এখন ৩৪২ (আত্মপক্ষের সমর্থন) গ্রহণ করা হবে বলে আদালত জানান। এরপর আদালত বিরতিতে যান। বিরতি শেষে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা ফের সময়ের আবেদনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। আদালত এ সময় তা মঞ্জুর করে আগামী ১৫ মে আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য করেন।
আজ সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে খালেদা জিয়া তাঁর গুলশানের বাসভবন থেকে বের হন। ১১টা ৩৫ মিনিটে পুরান ঢাকার বকশীবাজারের বিশেষ আদালতে পৌঁছান তিনি।
বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখার কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবীর খান জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া প্রচণ্ড পায়ের ব্যথায় ভুগছেন। তিনি ভালো করে হাঁটতে ও দাঁড়াতে পারছেন না। বসলে উঠতে পারছেন না। এর মধ্যেই আজকে তাঁকে আদালতে হাজির হতে হয়েছে। দীর্ঘ সময় গাড়িতে বসে থাকতেও তাঁর অনেক কষ্ট হয়েছে। সঙ্গে সব সময় ওষুধ রাখতে হচ্ছে।
বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে বিএনপির চেয়ারপারসন আদালত কক্ষে পৌঁছান। আইনজীবীরা তাঁকে একটি চেয়ারে বসতে দেন। বিচারক এজলাসে বসলে সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা উঠে দাঁড়ান। এ সময় খালেদা জিয়া পায়ের ব্যথায় এতটাই কাবু ছিলেন যে, তিনি তখন চেষ্টা করেও চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে পারেননি।
পরে বিএনপির চেয়ারপারসনের আইনজীবী ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার এ ব্যাপারে আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া পায়ের ব্যথায় প্রচণ্ড অসুস্থ। তিনি বসতে-উঠতে বা হাঁটতে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করছেন। তাই তিনি দাঁড়াতে পারছেন না। এত অসুস্থতা নিয়েও তিনি শুধু আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে, আদালতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আজ আদালতে হাজির হয়েছেন।’ আদালত তখন বলেন, ‘ঠিক আছে।’
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন আর রশীদ।
২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী (পলাতক) ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান (পলাতক)।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাই